আব্দুস সালাম ,টেকনাফ(কক্সবাজার)
কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে আদালতের নির্দেশে মো. ফাহিম(৩) নামে এক শিশুর মরদেহ দাফনের ১৩দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ।
মো. ফাহিম(৩) উপজেলার হোয়াইক্যং ৭নং ওয়ার্ডের নয়াবাজার পূর্ব সাতঘরিয়া পাড়া এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে।
মঙ্গলবার(৭ মার্চ) বিকেলে টেকনাফের হোয়াইক্যং নয়াবাজার পুর্ব সাতঘরিয়া পাড়া এলাকার কবর স্থান থেকে শিশু মো.ফাহিমের মৃতদেহটি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুল হক চৌধুরীর উপস্থিতিতে কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
নিহত শিশু মো.ফাহিমের মামা ও মামলার বাদী মো. আলমগীর বলেন,আমার বোন রোকেয়া বেগম অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার পর তার বোন জামাই মো. হেলাল উদ্দিন শাকিলা আক্তার (২০) নামে এক নারীকে বিবাহ করেন। বিয়ের পর আমার বোন জামাই মো. হেলাল উদ্দিন প্রবাসে চলে যাওয়ায় আমার ভাগ্নি তানিয়া ও ভাগিনা মো. ফাহিমসহ একই সাথে এক ঘরে বসবাস করছিল। কিন্তু আমার ভাগিনা মো. ফাহিম তার সৎ মা শাকিলা আক্তারের হাতে প্রায় সময় নির্যাতনের শিকার হতো।
এক পর্যায়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার দিকে তাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করার পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আমার ভাগিনা মো. ফাহিম মারা যায় বলে প্রচার করে বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী।
তিনি আরও বলেন,এঘটনাটি তারা আমাদের না জানিয়ে তাড়াহুড়া করে স্থানীয়ভাবে গোপনে দাফন করে ফেলেন। ঘটনাটি আমরা জানার পর টেকনাফ মডেল থানায় গিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ৫জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন-টেকনাফের হ্নীলা লেচুয়াপ্রাং এলাকার দলিল আহমদের মেয়ে শাকিলা আক্তার (২০) ও
হোয়াইক্যং নয়াবাজার পূর্ব সাতঘরিয়া পাড়ার নুরুল হোসাইনের দুই ছেলে শাহীন পারভেজ(৩৫) ও বাদশা মিয়া(৪০),একই এলাকার আলী হোসনের মেয়ে আরফা বেগম(২৮) ও মোক্তার আহমদের ছেলে মো. ইউনুস(২৭)।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ-আল ফারুক বলেন,শিশু মো. ফাহিম হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হোয়াইক্যং নয়াবাজার পূর্ব সাতঘরিয়া পাড়ার কবর স্থান থেকে শিশু মো. ফাহিমের মৃতদেহটি কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। মৃতদেহ উত্তোলন করার পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। শিশু মো. ফাহিমের মৃত্যুর বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে মৃতদেহটি কবর থেকে তোলা হয়েছে। এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে বিস্তারিত আরো জানা যাবে।
তবে এ ঘটনায় মো. ফাহিমের সৎ মা মামলার ১নং আসামি শাকিলা আক্তারকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তার নিজ বসতঘর থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুলহক চৌধুরী বলেন,অধিকতর তদন্তের স্বার্থে টেকনাফ মডেল থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি টিম নিয়ে আদালতের নির্দেশে উপজেলার হোয়াইক্যং নয়াবাজার পূর্ব সাতঘরিয়া পাড়ার কবর স্থান থেকে মো. ফাহিম(৩) নামে এক শিশুর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।