শহিদুল ইসলাম
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।আজ রবিবার সকালে উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।দীর্ঘ নয়বছর পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।এতে সভাপতি পদে চারজন ও সম্পাদক পদে আটজন প্রার্থী হয়েছেন।সম্মেলন কে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সম্মেলনকে ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডজন খানেক নেতা মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে সভাপতি পদে চারজন যথাক্রমে হলদিয়াং পালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস, বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি শাহজাহান গাজী, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের উখিয়া উপজেলা কমিটির সাবেক সভাপতি আনিসুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক পদে রাজাপালং ইউপি সদস্য সরওয়ার কামাল পাশা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মিথুন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কায়ছার চৌধুরী রুবেল, যুবনেতা মাসুদ আমিন শাকিল, বশির আজাদ, কামাল সওদাগর, মকসুদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান।
এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান নিখিল।এছাড়া কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বলে জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর জানিয়েছেন।
টানা ১৪ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ উখিয়া শাখার বর্তমান কমিটির মেয়াদ ৯ বছর। বিগত ৯ বছরে উখিয়া যুবলীগের তেমন কোন অর্জন কিংবা সক্রিয় কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম কারো চোখে পড়েনি। বরং বৃহৎ এই সংগঠনটি ক্রমেই সংকোচিত হয়েছে; এমন মন্তব্য করেছেন উখিয়া যুবলীগের বর্তমান ও সাবেক একাধিক নেতা।
শুধু তাই নয়, উখিয়া উপজেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির মুষ্টিমেয় কিছু সদস্য মাঝেমধ্যে তাদের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের সাথে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় বর্তমান কমিটির অন্যতম সাংগঠনিক কর্মসূচি দাবীও করেন তারা।
জানাযায়, ২৫ মে ২০১৪ সালে উখিয়া যুবলীগের কমিটি গঠিত হয়। ৭১ সদস্যের এই কমিটি কমিটির মেয়াদ প্রায় ৯ বছর। গত ৯ বছরে বর্তমান কমিটি ৯টি ওয়ার্ড কমিটিও করতে পারেননি। পাঁচটি ইউনিয়নের ৩টিতে যথাক্রমে হলদিয়াপালং, জালিয়া পালং, পালংখালীতে ছিলো আহবায়ক কমিটি। এই আহবায়ক কমিটিগুলো একাধিকবার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। তারপরও উপজেলার শীর্ষনেতারা একটি ইউনিয়নেরও সম্মেলন করতে পারেননি। নেতাকর্মীরা ব্যাক্তিগত ফায়দা লুপে নিতে উম্মাদ ছিলো। যার ফলে সংগঠন ক্রমেই হারিয়েছে সোনালী ঐতিহ্য ও জৌলুশ। বাকি ২ ইউনিয়ন যথাক্রমে রত্নাপালং ও রাজাপালংয়ে ছিলো মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি। এছাড়াও বর্তমান কমিটির অনেকেই মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠে আসছিল। রাজাপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হানিফ আজাদ মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলো পরে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে যেনতেন ভাবে চালিছে রাজাপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। অপর দিকে জালিয়াপালং ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক ফজল কাদেরও মাদক মামলায় প্রেফতার হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে তাকে অব্যাহতি দিয়ে দায় এড়িয়ে কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও আহবায়ক কমিটি দেওয়া। প্রতিটি কমিটির বিনিময়ে হতো মোটা অংকের লেনদেন।
তাছাড়া বেশির ভাগ ওয়ার্ডই কমিটি শুণ্য। যার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটা নেই বললেই চলে।
এসব নানা কারণে তৃণমূলের নেতৃকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে অনেক যুবনেতাদেন মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে অদৃশ্য কোন্দল। এমন অভিযোগ করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবলীগ নেতা।
তার মতে, গত ৯ বছর জেলা কমিটির বিশেষ নির্দেশ ছাড়া কোন কর্মীসভা, বর্ধিত সভা, জরুরী সভার আয়োজন করেনি বর্তমান কমিটি। বিগত ২০১৪ সালের ২৫ মে উখিয়া যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বর্তমান কমিটির নেতারা যুবলীগকে তাদের পৈত্রিক সম্পদের মত নিজেদেন করে রেখেছে। বিভিন্ন কারণে নেতাকর্মীরা এতদিন মুখ খোলতে পারেনি। তৃণমূলের বেশির ভাগ নেতাকর্মী এই কমিটির পরিবর্তন চায়।
উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসাইন আবু বলেন, দেশব্যাপী শুদ্ধি অভিযান চললেও। বর্তমান সরকার তৃতীয় বারের মতন ক্ষমতায় থাকায় অনেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রমকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের খুবই অভাব। তাছাড়া ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক লেনদেন বিষয়েও তৃর্ণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করা যেতো। বর্তমান কমিটি তা না করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে। যুবলীগের কার্যক্রম একেবারে শূণ্যের কোটায় পৌঁছছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ বলেন,ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা যুবলীগের সাকেক নেতা সুজন কান্তি পাল বর্তমান কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে একগাদা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান কমিটি উখিয়ার যুবলীগকে ফ্যাশন শো যুবলীগে পরিণত করেছেন।
##