আমি শিক্ষক,বদলি জনিত বিদায়ী হয়ে,
তুতুরবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ভালুকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসি।
বিদায় বেলায় মনে কিছুটা আনুষ্ঠানিকতার তৃষ্ণা ছিল।
কিভাবে আশা করি? আমার আগে দুজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের বদলি জনিত বিদায় ছিল।তাঁরা তুতুরবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে রত্নাপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষকের চাকরি কাল ছিল ২৪ বছর। উনি যেখানে বিদায় পায়নি।সেখানেই আমার,আনুষ্ঠানিক বিদায় আশা করা কতটুকু সমীচীন! এবং আমি নির্লজ্জের মতো কিভাবেই বিদায় আশা করি!
“বিদায় বলতে, একটু মরে যাওয়া হয়।
শুভ সকাল বলতে, মেঘলা শীতে নতুন রৌদ্রের আশা।”
যদি বিদায়টা বদলি জনিত বিদায় না হয়ে অবসর জনিত বিদায় হত,হয়তো হালকা মরেই যেতাম।
এইভাবেই এখনো অনেক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের অবসর হয়, কিন্তু তাঁরা আনুষ্ঠানিক বিদায় পায়না।
কিন্তু আমরা শিক্ষক হিসেবে, শিক্ষক থেকে এই পাওনা আশা করি। এটা আমাদের অধিকার। দীর্ঘ চল্লিশ বছর চাকরি করার পর আমরা আশা করি, শেষ কর্মদিবসে সুন্দর, আনুষ্ঠানিক ও আমাকে সম্মানিত করার মতো বিদায়।যেখানে আমি শিক্ষক, আমাকে সম্মানিত করার মতো উদ্যোগ আমার হয়ে উঠে না। সেখানেই আমার, আর কিছু বলার থাকে না।
আমি শিক্ষক হিসেবে আশা করি, অস্তগামী সূর্যের বর্ণছটা ও যেমন সবাইকে মুগ্ধ করে,
আমার শেষ বিদায়ের লগ্ন ও যেন তেমনি মহিমান্বিত হই।
যদি আমরা শিক্ষক হিসেবে, একজন শিক্ষককে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায় দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি।তখন হয়তো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক আমাদের সম্মানিত করতে এগিয়ে আসবে।
হয়তো দীর্ঘকাল পরিশ্রমের একটু তৃপ্তি আসবে,মানসিক শান্তি আসবে।অবসর পরবর্তী জীবনে খানিকটা স্মৃতি থাকবে।
শারমিন আকতার
সহকারী শিক্ষক
ভালুকিয়া পালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়