স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:
কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ায় কামাল হোসেন নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে বাড়ির একটি কক্ষে বেঁধে মারধর ও নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কামালের দাবি, অবৈধ লেনদেনকে কেন্দ্র করে খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্রাঙ্কনের শিক্ষক সাবেক শিবির ক্যাডার ফয়সাল ও তার সহযোগীরা তাকে বেঁধে মারধর করেছে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে বাজারপাড়া এলাকায় ফয়সালের বাড়িতে এঘটনা ঘটে। কামাল ঘাটপাড়া এলাকার ইমাম শরীফের ছেলে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সদর থানার এএসআই আশরাফের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কামাল হোসেন বলেন, আমি ফয়সালের ইয়াবা পাচার চক্রের সদস্য ছিলাম। সর্বশেষ পাচারের উদ্দেশ্যে ফয়সালের দেওয়া একটি ইয়াবার চালান চট্টগ্রামে নিয়ে গেলে ছিনতায়ের শিকার হই আমি। এরপর থেকে ওই মাদকের আড়াই লাখ টাকা আমার কাছ থেকে দাবী করে আসছে ফয়সাল। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে বাজার থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বেঁধে নির্যাতন চালায় ফয়সাল ও তার পরিবারের লোকজন।
কামালের দাবি, ফয়সালের ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ইয়াবাসহ বাজারপাড়া এলাকার হারুন আটক হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে ফিরেছেন।
কামালের ভাই আনোয়ার বলেন, আমার ভাই কামালকে বাজার থেকে ধরে নিয়ে যায় ফয়সাল। খবর পেয়ে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ কল করার পর আমরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করি। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দু রশিদ বলেন, সকালে ফয়সাল এসে আমাকে জানান কামাল তার (ফয়সাল) বাড়িতে যাওয়ার অপরাধে তাকে বেঁধে রেখেছেন। পরে জানতে পারি কামালকে ফয়সাল বাজার থেকে ধরে নিয়ে তার বাড়িতে বেঁধে রাখেন।
মেম্বার আব্দু রশিদ আরোও বলেন, কামাল আমার কাছে দাবী করেছে ফয়সালের দেওয়া মাদকের একটি চালান ধরে ফেলে। একারণে ফয়সাল তার কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা দাবী করছে। এইসব মাদকের লেনদেন বলে আমার কাছে দাবী করেছে কামাল। আমি ঘটনাস্থলে না গেলে হয়তো ফয়সালকে তারা মেরে ফেলতো। এর বাইরে আমি আর কিছু জানিনা।
এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে ফয়সাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার চাচীর সাথে কামালের পরকিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। সকালে চাচীর বাড়ি থেকে তাকে বের হতে দেখে ধরে বেঁধে রেখে স্থানীয় মেম্বারকে অবগত করি। পরে কামালের পরিবারের লোকজন এসে আমার উপর হামলা চালায়। একে আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছি।
তিনি আরোও বলেন, আমি এবং আমার স্ত্রী শিক্ষকতা পেশায় রয়েছি। তাদের পরকিয়া সম্পর্কের কারণে নানা হয়রানি করছে আমাদের। কামালের স্ত্রী আমার চাচীকে একবার মারধর করে আহত করেছিলো। ওই মামলায় আমাদের আসামী করার কারণে বর্তমানে আড়াই লাখ টাকা ঋণে রয়েছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সদর থানার এএসআই আশরাফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দু’পক্ষ দু’ধরনের বক্তব্য দেওয়ার কারণে পুরো ঘটনা বুঝে উঠতে পারছিনা। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান পুলিশের কর্মকর্তা।