সংস্কৃতির বিভাগ বলতে আমরা মূলত বস্তুগত বিভাগ (বাড়ি ঘর, তৈজসপত্র, যন্ত্রপাতি, জীবযাপন প্রণালী) আর অবস্তুগত
বিভাগ (সাহিত্য, শিল্প, দর্শন,দৃষ্টিভঙ্গি) কে নির্দেশ করে থাকি।
বৃহত্তর উখিয়া উপজেলার মানুষ বরাবরই দ্বিতীয় বিভাগ থেকে বঞ্চিত, প্রথম বিভাগ থেকেও বঞ্চিত তবে শতভাগ নয়।উখিয়া উপজেলার লোকজনের স্বতন্ত্র কিছু আচার রয়েছে যেসব আচার দুই বাংলার
কোনো অংশে দেখা যায় কিনা আমার জানা নেই।
এসব আচারের মধ্যে রন্ধন ব্যাপার টা উল্লেখযোগ্য।
উখিয়ার লোকজনের রন্ধনশিল্প আর খাদ্যাভাস দক্ষিণ চট্টগাঁর অন্যান্য অঞ্চল হতে সম্পুর্ণ আলাদা। আর উখিয়া উপজেলার লোকজনের স্বতন্ত্র কিছু ইতিবাচক গুণও আছে।
এই ক ‘টি বিষয় বৈকি উখিয়া উপজেলার লোকজনের মধ্যে স্বতন্ত্র কোনো ধরণের আচার-রীতি নেই বল্লেই চলে।
সাহিত্য এবং দর্শন দুটোয় একটি সম্প্রদায়ের সাথে জড়িয়ে থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।এই দুই মাধ্যম দ্বারা একটি সম্প্রদায় তার পরিচয়-তার দৃষ্টিভঙ্গি -তার উন্নয়নমান প্রকাশ করে থাকে । দর্শন একটি সম্প্রদায় কে চিন্তা করতে শেখায়,আর এই চিন্তা করার শিক্ষা সেই সম্প্রদায় কে তার ইতিবাচকতা -নেতিবাচকতা-পিছিয়ে থাকা ইত্যাদি নির্ণয়ের সুযোগ দেয়।
অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে দেশের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হয়েও, উখিয়া উপজেলার লোকজন সাহিত্য-দর্শন থেকে সম্পূ্র্ণ বঞ্চিত আর এর পেছনে বহু কারণও বর্তমান।
মূখ্যত্ব, উখিয়ার মানুষকে সাহিত্য বা দর্শনের দিকে আহ্বান জানানোর কাজটির প্রতি কেউ আগ্রহ দেখায় নিই।উখিয়া উপজেলা থেকে বহু কৃতি সন্তান রাজনীতি -মেধা-ক্রিকেট -ফুটবল এবং সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা কে মাধ্যম করে উখিয়ার প্রসারিত নামে অন্যন্য উজ্জ্বলতা দান করেছে-উখিয়া উপজেলার লোকজনকে গর্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ দিয়েছে।নিশ্চই বহু লোকের অনুপ্রেরণা সেইসকল কৃতি সন্তানেরা এমন অপূর্ব সাধন করতে পেরেছিল।সাহিত্য এবং দর্শনের বিষয়ে অনুপ্রেরণা -আহ্বান প্রতিষ্ঠার কাজটির মহৎ চেষ্টার চেষ্টা কেউ প্রয়োজন বলে মনে করেনি।
উখিয়ার লোকজনের মনের মধ্যে অবশ্যই এবং অবশ্যই দুই বাংলার যেকোনো অংশের ন্যয় সাহিত্যপ্রীতি লুপ্ত আছে। সেই লুপ্ত সাহিত্যপ্রীতি কে দাগ কেটে বের করতে একটি কমিউনিটি কে এগিয়ে আসতে হবে।কেননা এই সাহিত্যপ্রীতি এবং দর্শন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উখিয়ার নবপ্রজন্ম কে সুরুচিসম্মত বিনোদনে আনতে হবে।
উখিয়া তে শ্রদ্ধেয় কবি আদিল উদ্দিন চৌধুরীর ন্যয় মানুষ বর্তমান।উনার কবিতা এবং সাহিত্য উনার মতই চমৎকার, তিনি একজন সুবোধসম্পন্ন ব্যক্তি এবং বাগ্মীও তবে,উনার এই দুটি গুণ কে পুঁজি করে এই আহ্বান প্রতিষ্ঠার কাজে এগিয়ে আসতে হবে।
উখিয়া উপজেলার লোকজন এখনো বহু মৌলিক বিষয় থেকে যথারীতি বঞ্চিত, আর এই মৌলিক বিষয়সমূহের মধ্যে সুশিক্ষা-দর্শন-সাহিত্য অন্যতম।
উখিয়ার একদল তরুণ তাদের মৌলিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠায় সেচ্ছাসেবী হয়ে কাজ করে যাচ্ছে ,তাদের এই কাজ অবশ্যই প্রশংসনীয়।কিন্তু তাদের কেউ সাহিত্য-দর্শন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে কিছু করে নিই।
উখিয়া উপজেলার সাক্ষরতার হার ৩৬.৩০%। উপজেলায় ১টি স্নাতক (সম্মান) কলেজ, ১টি ফাজিল মাদ্রাসা, ১টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ (মহিলা), ২টি আলিম মাদ্রাসা, ১টি স্কুল এন্ড কলেজ, ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১২টি দাখিল মাদ্রাসা, ২টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৬টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা ও ১৬টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।
নিঃসন্দেহে উখিয়া উপজেলায় জনসংখ্যা বিবেচনায় স্কুল -কলেজের সংখ্যা অত্যন্ত কম এবং ২-১টি ব্যতিক্রম বাদে তেমন কোনো স্কুল কলেজই যথেষ্ঠ উন্নত নয়।
এই মূহুর্তে দুটি পদক্ষেপ জরুরি-প্রথমত -প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পাঠাঘার প্রতিষ্ঠা আর দ্বিতীয়ত হলো উখিয়া উপজেলায় কক্সবাজার জেলা কেন্দ্রিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।এতে করে উখিয়ার মানুষ তথা কক্সবাজার জেলা যেমন বেনিফিসিয়ার হবে তেমনি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রবিজ্ঞান-রোহিঙ্গাদের নিয়ে গবেষণার প্রক্রিয়া টা ও সহজতর হবে।
উখিয়র স্বাক্ষরতার হার অত্যন্ত দুঃখজনক, আর এই স্বাক্ষরতার হার এর দরিদ্র মানের কারণ যে অত্র এলাকায় সাহিত্য-দর্শনের অনুপস্থিতি তাতে কোনো সন্ধেহ নেই।আর এই জন্য উখিয়া উপজেলার লোকজনের প্রতি সাহিত্য-দর্শন -সুশিক্ষা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আহ্বান প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি।আর এই আহ্বান প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে আমাদের -আপনাদের -উখিয়াবাসীদের একটি কমিউনিটি কে।